ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম
বর্তমানে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট এর বর্তমান স্ট্যাটাস চেক করা যায়। বিভিন্ন ওয়েবসাইট অনুযায়ী ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।
পাসপোর্ট এক ধরনের ভ্রমণ নথি যা একটি দেশের সরকার কর্তৃক জারি করা হয়। পাসপোর্ট মূলত আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভ্রমণকারীর জাতীয়তা ও পরিচয় প্রত্যয়িত করে।
বাংলাদেশি নাগরিক ৫ বছর এবং ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারে। সকল বাংলাদেশ নাগরিক পাসপোর্ট তৈরি করতে পারে।
তবে বাংলাদেশী নাগরিকদের মধ্যে ১৮ বছরের কম এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী আবেদনকারীরা ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট তৈরি করতে পারবে না।
ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম
বিমানবন্দরের ই গেট ব্যবহার করে ই পাসপোর্টধারী অল্প সময়ে ভ্রমণ করতে পারে। এছাড়া ই পাসপোর্ট ব্যবহার করে অতি দ্রুত ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করা যায়।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম একই হয়ে থাকে। অনলাইন এবং অফলাইন দুই ভাবে ই পাসপোর্ট চেক করা যায়
অনলাইনে ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম
ই পাসপোর্ট এর বর্তমান স্ট্যাটাস পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ এর মাধ্যমে জানা যায়। অনলাইনে ই পাসপোর্ট চেক করার জন্য www.epassport.gov.bd ওয়েবসাইটের ‘Check Status’ মেন্যুতে যেতে হবে।
অতঃপর ডেলিভারি স্লিপের উপরে ডান পাশে ১৩ ডিজিটের অ্যাপ্লিকেশন আইডি এবং জন্ম তারিখ প্রদান করে ‘Captcha’ পূরণ করে ‘Check’ বাটনে ক্লিক করে ই পাসপোর্ট চেক করা যায়।
ই পাসপোর্ট কি
এমআরপি পাসপোর্ট এর উন্নত কপি ই পাসপোর্ট। ই পাসপোর্ট অত্যন্ত নিরাপত্তা সংবলিত একটি ব্যবস্থা। এমআরপি পাসপোর্ট এর তুলনায় ই পাসপোর্ট এর বেশি সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
এমআরপি পাসপোর্টে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা তথ্য যাচাই বাছাই করে পাসপোর্টে সিল দিয়ে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে থাকে। তবে ই পাসপোর্ট নিজে থেকেই যন্ত্রের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারে।
ই পাসপোর্ট ডেলিভারি চেক
অনলাইনের মাধ্যমে www.epassport.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন আইডি এবং অ্যাপ্লিকেশন আইডি প্রদানের মাধ্যমে পাসপোর্ট এর বর্তমান স্ট্যাটাস বের করতে হবে।
অতঃপর Your Passport is ready for issuance লেখা আসলে বুঝতে হবে আপনার আবেদনকৃত পাসওয়ার্ডটি ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত হয়েছে।
ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
ই পাসপোর্ট ব্যবহারে বাড়তি সুবিধা পাওয়ায় বর্তমানে এর চাহিদা পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশী নাগরিকদের ই পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য প্রথমে আবেদন করতে হয়।
পাসপোর্ট এর প্রকারভেদ অনুযায়ী আবেদন প্রক্রিয়া কিছুটা ভিন্ন হয়। যেমন- অতীব জরুরি ই পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে পুলিশ প্রতিবেদন সঙ্গে আনতে হবে।
- ই-পাসপোর্টের আবেদন অনলাইন কপি (প্রিন্ট কপি)
- পাসপোর্ট অ্যাপ্লিকেশন সামারি কপি (প্রিন্ট কপি)
- পাসপোর্ট ফি প্রদানের স্লিপ (মূল কপি/প্রিন্ট কপি)
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) অথবা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ (BRC English Version) (ফটো কপি এবং মূল কপি)
- পিতামাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি (শিশুদের ক্ষেত্রে আবশ্যিক)
- নাগরিক সনদ ও পেশা প্রমাণের সনদ
- পূর্বের পাসপোর্টের ফটো কপি এবং মূল কপি (যাদের আগের পাসপোর্ট আছে)
পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে
একজন বাংলাদেশী নাগরিক ৪৮ পৃষ্ঠা এবং ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট তৈরি করতে পারে। ৪৮ এবং ৬৪ উভয় পৃষ্ঠা বিশিষ্ট ৫ বছর এবং ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট তৈরি করা যায়।
৫ বছর এবং ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট তৈরির খরচ ভিন্ন হয়ে থাকে। বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য পাসপোর্ট তৈরির খরচের সাথে মোট ১৫% ভ্যাট যুক্ত করা হয়। যেমন-
৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে-
- সাধারণ (২১ কর্মদিবস) ফি ৪ হাজার ২৫ টাকা।
- জরুরি (১০ কর্মদিবস) ফি ৬ হাজার ৩২৫ টাকা।
- অতীব জরুরি (২ কর্মদিবস) ফি ৮ হাজার ৬২৫ টাকা।
৪৮ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে-
- সাধারণ ফি ৫ হাজার ৭৫০ টাকা।
- জরুরি ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা।
- অতীব জরুরি ফি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা।
৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে-
- সাধারণ ফি ৬ হাজার ৩২৫ টাকা।
- জরুরি ফি ৮ হাজার ৬২৫ টাকা।
- অতীব জরুরি ফি ১২ হাজার ৭৫ টাকা।
৬৪ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে-
- সাধারণ ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা।
- জরুরি ফি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা।
- অতীব জরুরি ফি ১৩ হাজার ৮০০ টাকা।
অনলাইনের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম অনেক সহজ হয়ে থাকে। তবে অনলাইনে চেক করার নিয়ম জটিল মনে হলে সরাসরি পাসপোর্ট আবেদনের অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। এছাড়া ই পাসপোর্ট আবেদন ফরমে সকল তথ্য এবং কাগজপত্র সঠিক ভাবে প্রদান করতে হবে। ধন্যবাদ।