মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম
বর্তমানে মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং অ্যাপস রয়েছে। তবে এ সকল ওয়েবসাইট এবং অ্যাপস যে কোনো সময় গ্রাহককে প্রতারিত করতে পারে।
বাংলাদেশ টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি) অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বাংলাদেশী মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৬ কোটি ৫৫ লাখ ৭২ হাজার।
মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে ১৯ কোটি ৩৬ লাখে পৌঁছেছে এবং জুলাই মাস পর্যন্ত বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩ কোটি ১৯ লক্ষ।
তবে অধিকাংশ মোবাইল ব্যবহারকারী কেবলমাত্র যোগাযোগ এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করার জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকে। তবে চাইলে মোবাইল দিয়ে ইনকাম করা সম্ভব।
মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম
বর্তমানে মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার সব থেকে বৈধ এবং নিরাপদ উপায় হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিল্যান্সিং একটি মুক্ত পেশা। ফ্রিল্যান্সিং এর সাহায্যে প্রতি মাসে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা ইনকাম করা যায়।
বাংলাদেশ সরকার ফ্রিল্যান্সারদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রদান করে থাকে। মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের বড় বা প্রফেশনাল কাজ করা না গেলেও ছোটখাটো কাজ করা যায়। যেমন-
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে ইনকাম-
- মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কন্টেন্ট রাইটিং এবং ডাটা এন্ট্রি সহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করা যায়। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কাজ পাওয়ার জন্য Fiverr, Upwork এবং Freelancer ইত্যাদি অনলাইন মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট তৈরি করে প্রোফাইল করতে হয়।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ইনকাম-
- অনলাইনের মাধ্যমে প্রোডাক্ট বা বিভিন্ন সার্ভিস প্রচার করে কমিশন আয়ের প্রক্রিয়াকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলা হয়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেস নিবন্ধন করে মোবাইলের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া, ব্লগ বা ইউটিউবে লিংক শেয়ার করতে হয়।
ইউটিউবে কনটেন্ট তৈরির মাধ্যমে ইনকাম-
- বর্তমানে মোবাইলের সাহায্যে বিভিন্ন ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করে ইউটিউবে আপলোড করার মাধ্যমে ইনকাম করা যায়। এক্ষেত্রে প্রথমে একটি ইউটিউব চ্যানেল ওপেন করে মনিটাইজেশন শর্ত পূরণের মাধ্যমে মনিটাইজেশনের জন্য আবেদন করতে হয়।
মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম app
বর্তমানে স্মার্টফোনে বিভিন্ন অ্যাপস এর সাহায্যে প্রতি মাসে সর্বনিম্ন প্রায় ৩-৪ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা যায়। যেমন-
বর্তমানে মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার অ্যাপস গুলোর মধ্যে FanFare অন্যতম। FanFare অ্যাপস এর সাহায্যে কোন প্রকার ডিপোজিট বা ইনভেস্ট ছাড়াই সম্পূর্ণ ফ্রিতে টাকা ইনকাম করা যায়।
এক্ষেত্রে প্রথমে গুগল প্লে স্টোর থেকে FanFare অ্যাপটি ইন্সটল করে ওপেন করতে হবে। অতঃপর গুগল অথবা জিমেইল অ্যাকাউন্ট দিয়ে সাইন আপ করতে হবে।
সাইন আপ করে বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর কোম্পানির নাম সহ ছোটখাট ভিডিও তৈরি করে আপলোড করতে হবে। FanFare আপলোডকৃত ভিডিও Approved করলে কিছু পয়েন্ট ব্যালেন্সে যোগ হবে। যা পরবর্তীতে উইথড্রো করা যায়।
আরও দেখুনঃ অনলাইন ইনকাম সাইট বিকাশ পেমেন্ট
মোবাইল দিয়ে ইনকাম করার উপায়
বর্তমানে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে মোবাইল ফোন শুধুমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা হিসাবে ব্যবহার না করে টাকা ইনকামের জন্য ব্যবহার করা যায়। যেমন-
মোবাইল দিয়ে ভিডিও এডিটিং এর মাধ্যমে ইনকাম-
- বর্তমানে স্মার্টফোনের জন্য গুগল প্লে স্টোরে অসংখ্য ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার পাওয়া যায়। এ সকল সফটওয়্যার এর সার্ভিস সম্পূর্ণ ফ্রিতে ব্যবহার করা যায়। ভিডিও এডিটিং করে প্রতি মাসে ন্যূনতম প্রায় ১৫ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা যায়।
ফেসবুকের মাধ্যমে মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম-
- বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলোর মধ্যে ফেসবুক সব থেকে জনপ্রিয়। মোবাইলের সাহায্যে ফেসবুক পেজ তৈরি করে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করার মাধ্যমে ইনকাম করা যায়। এক্ষেত্রে প্রতি মাসে সর্বনিম্ন প্রায় ৩০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা যায়।
মোবাইল দিয়ে সার্ভে ও মাইক্রো টাস্ক এর মাধ্যমে ইনকাম-
- বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি কাস্টমারের মতামত বা ফিডব্যাক নেওয়ার জন্য অনলাইন সার্ভে দিয়ে থাকে। অনলাইন সার্ভের মাধ্যমে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করা যায়। Toluna, Swagbucks, এবং InboxDollars সহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম গুলোতে সার্ভে পূরণ করা যায়।
ভিডিও দেখে অনলাইন ইনকাম
বিভিন্ন কোম্পানি ওয়েবসাইট এবং অ্যাপস এর মাধ্যমে তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন বা অ্যাড প্রচার করে থাকে। মোবাইলের মাধ্যমে এ সকল ভিডিও এড দেখে ইনকাম করা যায়।
তবে অনেক ওয়েবসাইট বা অ্যাপসে ভিডিও এড দেখার জন্য ডিপোজিট বা ইনভেস্ট করতে হয়। এ সকল ওয়েবসাইট ঝুঁকিমুক্ত হওয়ায় ইনভেস্ট করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
শেষ কথা
মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার জন্য প্রথমে যে কোন একটি অনলাইন কাজে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। বর্তমানে ইউটিউব এবং ফেসবুকের মাধ্যমে অনলাইনের বিভিন্ন প্লাটফর্মে কাজ শেখানো হয়। তবে অনেক ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক পেজে প্রতারণামূলক ওয়েবসাইট বা অ্যাপসের প্রচার করা হয়। এসব কল চ্যানেল এবং পেজর প্রতারণা থেকে সতর্ক থাকতে হবে। ধন্যবাদ।